স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের সফল উত্তরণে দেশের নীটওয়্যার খাতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও তা সমাধানের লক্ষ্যে প্রোডাকশন ট্রান্সফরমেশন পলিসি রিভিউ (পিটিপিআর) এর অংশ হিসেবে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) সেন্টারের প্রতিনিধি দলের সাথে গত ২৫ মে ২০২২ তারিখে বিকেএমইএ’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, সহ-সভাপতি (অর্থ) মোরশেদ সারোয়ার সোহেল, সহ-সভাপতি আকতার হোসেন অপূর্ব, পরিচালক মোস্তফা মনোয়ার ভূঁইয়া।
অন্যদিকে OECD ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রতিনিধি দলে ছিলেন ইকোনোমিক ট্র্যান্সফরমেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান অ্যানালিসা প্রিমি, ট্রেড অ্যান্ড ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্টের উপদেষ্টা ড্যানিয়েল রবার্ট, অর্থনীতিবিদ ম্যানুয়েল টসেলি, ইন্টার রিজিওনাল অ্যাডভাইজার মেরেজিনি কেটেসা।
বাংলাদেশের প্রাধান্যশীল ও সম্ভাবনাময় খাতগুলোর বিদ্যমান সমস্যা, সম্ভাবনা ও প্রাধান্যশীল বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যালোচনা করে প্রডাকশন ট্রান্সফরমেশন পলিসি রিভিউ (পিটিপিআর) স্ট্র্যাটিজি পেপার তৈরি করবে OECD ডেভেলপমেন্ট সেন্টার যেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর উপর একটি দিক নির্দেশনা ও পরামর্শমূলক রূপরেখা থাকবে। এলক্ষ্যে দেশের ১২ টি খাতকে তালিকাভুক্ত করে OECD ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে নীটওয়্যার খাতকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিনিধি দলটি। এ খাতের সমস্যা, সমাধান ও সম্ভাবনা নিয়ে বিকেএমইএ ও ওইসিডি’র মধ্যে উক্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এলডিসিভুক্ত দেশের তালিকাভুক্ত হওয়ায় দেশের তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যে ২০২৯ সালে অগ্রাধিকারমূলক রপ্তানি সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে উৎপাদন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, অপ্রচলিত ও নতুন বাজার অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনায় বায়ারদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পে বিশ্বের প্রথম সারির দেশ। এই খাতের উন্নয়ন ও তা টিকিয়ে রাখা অনেকাংশেই নির্ভর করে ন্যায্যমূল্যের উপর। বায়ারের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এই খাতের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ম্যান মেইড ফাইবারের ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়টিও বৈঠকে গুরুত্বের সাথে আলোচনা হয়। এর ব্যবহার একদিকে উৎপাদন খরচ কমাবে, প্রকৃতির উপর অতি নির্ভরতা কমাবে। অন্যদিকে ব্যাপক বৈশ্বিক চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে বৈচিত্র্যময় তৈরি পোশাক উৎপাদনের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্য আদায়ে বায়ারদের সাথে দর কষাকষিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সহায়তা করবে বলে বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন।
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, অপচয় কমানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস সন্ধানসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে এশিয়া, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অপ্রচলিত কিন্তু সম্ভাবনাময় বাজার অনুসন্ধানের প্রসঙ্গও বৈঠকে উঠে আসে।
